বিশেষ প্রতিবেদন,কলকাতা:লকডাউনের নিয়ম না মেনে দলীয় কর্মী পবন জানার মৃতদেহ নিয়ে মেদিনীপুরে মিছিল করায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছে পুলিশ। শুধু দিলীপ ঘোষই নন, মেদিনীপুরের কোতায়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে আরও পাঁচজন বিজেপি নেতার বিরুদ্ধেও। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বিজেপির রাজ্য নেতা সায়ন্তন ঘোষ, সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো প্রমুখ।
পুলিশের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে তৃণমূল। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বিজেপির তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, ‘পুলিশ ঠিক কাজ করেছে। বিজেপি দলটার কোনও সংস্কৃতি নেই। তারা শুধু ধ্বংস করতে চায়। মানুষ তাদের কোনও দিন গ্রহণ করবে না। তাই সব ক্ষেত্রে জোরজুলুম করে ক্ষমতা দখল করতে চাইছে। তাদের স্বপ্ন কোনও দিনই সফল হবে না। সারা বছর এরা মানুষের পাশে থাকে না। মানুষের জন্য কাজ করে না। শুধু ভোট চাইতে যায়। পুলিশের উচিত এই দলটির বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হওয়া।’
যদিও পুলিশের এই এফআইআরের তীব্র সমালোচনা করেছে বিজেপি। দলের তরফে মেদিনীপুরের জেলা সভাপতি সমিতকুমার দাস বলেছেন, ‘রাজ্যের পুলিশ পুরোপুরি শাসক দলের কথা শুনে চলছে। লকডাউনের নিয়ম ভাঙার জন্য যদি বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা যায়, তা হলে তো তৃণমূল নেতা এবং মন্ত্রীদের বিরুদ্ধেও হাজার একটা এফআইআর দায়ের করতে হয়। এমনকী, জেলাশাসক, পুলিশ সুপারদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ দায়ের করতে হয়। তা কি পুলিশ করেছে? পুলিশ এখন নানা ছলছুঁতোয় বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা করার পথ খুঁজছে।’
উল্লেখ্য, গত বুধবার প্রধানমন্ত্রীর চিঠি বিলি করতে গিয়ে আক্রান্ত হন বিজেপি কর্মী পবন জানা। কয়েকজন সশস্ত্র দুষ্কৃতী তিনি–সহ ৬ বিজেপি কর্মীর ওপর আক্রমণ চালায়। গুরুতর আহত পবনকে প্রথমে দাঁতন হাসপাতালে, পরে মেদিনীপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়। কিন্তু শুক্রবার বিকেলে তাঁর মৃত্যু হয়। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল নেতা ও কর্মীদের সঙ্গে তাদের আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এই কাজ করেছে। প্রথমে ঘটনাকে রাজনৈতিক সঙ্ঘর্ষ বলে মেনে নিলেও পরে তৃণমূল বিষয়টি গ্রাম্য বিবাদ বলে উল্লেখ করে।
দলীয় কর্মীর খুনের প্রতিবাদে জেলা জুড়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপি নেতা ও কর্মীরা। ছুটে যান রাজ্য নেতারাও। এর মধ্যে শনিবার পবন জানার দেহ নিয়ে যাওয়া হয় দাঁতনে। জেলার নেতাদের পাশাপাশি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও সেখানে যান। সাংসদ জ্যোতির্ময় মাহাতো, রাজ্য নেতা সায়ন্তন ঘোষ–সহ জেলার অন্য নেতারাও তাঁর সঙ্গে ছিলেন। পুলিশের অভিযোগ, মৃতদেহ নিয়ে মিছিল করে লকডাউনের নিয়ম ভেঙেছেন বিজেপি নেতারা।